দেশের শীর্ষ আদালতের চেম্বার জজ একটি ঐতিহাসিক রায়ে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ-এ প্রশাসক ও নতুন বোর্ড নিয়োগকে বেআইনি ঘোষণা করেছেন।
গত ৭ মে অনুষ্ঠিত শুনানিতে আদালত রায় দেন যে, প্রশাসক নিয়োগ ও নতুন বোর্ড বসিয়ে নগদের ওপর সাময়িক নিয়ন্ত্রণ আরোপের চেষ্টা আইনসঙ্গত নয়। এর ফলে ডাক বিভাগের আওতাধীন এই প্রতিষ্ঠানটি এখন থেকে মূল মালিকপক্ষের নিয়ন্ত্রণে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রণীত নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হতে পারবে—এ নিয়ে আর কোনো আইনগত বাধা রইল না।
এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টও এ বিষয়ে করা একটি রিট আবেদন খারিজ করে দেন এবং স্পষ্ট করে দেন যে, প্রশাসক নিয়োগের উদ্যোগ গ্রহণযোগ্য নয়।
নগদের মালিকপক্ষ প্রথম থেকেই প্রশাসক নিয়োগকে অবৈধ ও প্রতিষ্ঠানবিরোধী ষড়যন্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়ের মাধ্যমে এখন তা পুরোপুরি প্রমাণিত হয়েছে যে, কোনো প্রতিষ্ঠানকে জোরপূর্বক দখলে নেওয়ার চেষ্টা যেমন অবৈধ, তেমনি তা দেশের ব্যবসা-বিনিয়োগ পরিবেশের জন্যও হুমকি।
নগদ মালিকপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ জমির উদ্দিন সরকার রায়ের পর বলেন, “এই রায় দেশের অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রমাণ করেছে যে, জোর করে প্রশাসক বসিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিকানা দখল করা যায় না। সুপ্রিমকোর্ট একটি সাহসী ও ন্যায়সংগত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, যা সুশাসনের প্রতিফলন।”
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এই রায় শুধুমাত্র নগদের জন্য নয় বাংলাদেশের ফিনটেক খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে এবং বেসরকারি খাতের স্বাধীনতা ও বিনিয়োগ নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় করবে।
এই বিষয়ে নগদের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, “গত আট মাস আমি জার্মানিতে একটি রেগটেক প্রজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, যেটি খুব শিগগির আরেকটি ইউনিকর্ন হতে চলেছে। তাই আমি নগদে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ফিরছি না, এটি আমি বোর্ডকেও জানিয়ে দিয়েছি। তবে নগদ আমার সন্তানের মতো, তাই নতুন বোর্ড বা সিইও যদি কখনো আমার পরামর্শ চান, আমি সবসময় প্রস্তুত থাকব।”